লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায় নি’র্মমভা’বে নি’হ’ত হয়েছেন স্পেন প্রবাসী সাইজ উদ্দিন দেওয়ান (৪০)। ছুটি শেষে বিদেশে ফিরে যাওয়ার প্রাক্কালে গত সোমবার তাকে ‘গু”লি ও কুপি’য়ে’ হ”ত্যা” করা হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের।
নিহতের স্ত্রী নার্গিস আক্তার কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার তো এত তাড়াতাড়ি স্বামী হারানোর কথা ছিল না। আমার ছেলেরা এতিম হয়ে গেল, তাদের দায়িত্ব নেবে কে? আমরা তো একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখছিলাম। স্পেন গিয়ে আমাদের নতুন করে জীবন শুরু করার কথা ছিল। ফারুক কবিরাজ-মেহেদী কবিরাজরা আমার স্বামীকে হ”ত্যা’ করেছে। আমি হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড চাই।’
পরিবার জানায়, মাত্র তিন মাসের ছুটি নিয়ে দেশে এসেছিলেন সাইজ উদ্দিন। শনিবার স্পেনে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ছুটি শেষ হওয়ার আগেই তাকে কবরস্থ করা হলো। তার অকাল মৃত্যুতে স্ত্রী ও দুই সন্তান দিশেহারা। চোখে অন্ধকার ভবিষ্যৎ দেখছেন তারা।
স্বজনদের অভিযোগ, সাইজ উদ্দিনকে প্রথমে ‘গু’লি” করে পরে এলো’পা’তাড়ি কু’পি’য়ে আহত করা হয়। এরপর হাসপাতালে নেওয়ার পথে ঘাতক পক্ষের লোকজন এক ঘণ্টা ধরে তাকে আটকে রাখে, যার ফ’লে অ’তিরি’ক্ত রক্ত’ক্ষরণে তার ‘মৃ’ত্যু হয়।
নিহতের বড় ছেলে নিখন হোসেন বলেন, ‘আব্বু নানুর বাড়ি থেকে ফিরছিলেন। পথে ফারুক ও তার ভাই মেহেদী গুলি করেন, পরে কুপিয়ে জখম করেন। আমরা হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে আরিফ নামের এক ব্যক্তি প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখে।’
পরিবারের আরও অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজের অনুসারীরা আগে থেকেই সাইজ উদ্দিনের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। টাকা না দেওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত ছিল। পূর্বশত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে বুধবার রাতে ফারুক কবিরাজ, তার ভাই মেহেদী কবিরাজসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘হত্যা মামলার পর থেকে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
এদিকে ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বও জড়িয়ে আছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়তে থাকে। কৃষকদলের সদস্য সচিব জিএম শামীম ও ফারুক কবিরাজের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধের জেরে গত কয়েক দিনে একাধিক সংঘর্ষ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।