Dhaka 11:17 pm, Friday, 4 July 2025

মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই চালাতেন অনৈতিক কাজ, একে একে বেরিয়ে এল সব তথ্য

অপহরণের নাটক সাজিয়ে মুক্তিপণের নামে চাঁদা দাবির অভিযোগে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকা থেকে এক মা ও তার মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—বিথী হাওয়া ওরফে বিবি হাওয়া (৩৮) ও তার মেয়ে সুরভী সুলতানা (২০)।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

তিনি জানান, সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে নিউমার্কেট থানা পুলিশের একটি দল এলিফ্যান্ট রোডে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় চাঁদা দাবির একটি মামলা রয়েছে।

মামলার বাদী সৈকত নামের এক ব্যবসায়ী মিনিতা প্লাজায় একটি ঘড়ির দোকানের মালিক। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিথী ও সুরভী ঘড়ি কিনতে তার দোকানে আসেন এবং সৈকতের স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ গড়ে ওঠে।

২০ মার্চ বিথী তার মেয়ে সুরভীর জন্য দোকানে সেলসম্যান পদে কাজের অনুরোধ জানান। সুরভী কাজে যোগ দিলেও তার সন্দেহজনক আচরণের কারণে তাকে দোকানে না আসতে বলা হয়। এরপরও ২২ মার্চ সে দোকানে যায় এবং অসুস্থতার কথা বলে কিছুক্ষণ পর চলে যেতে চায়। সৈকত তাকে নিজেই বাসে তুলে দেন।

রাত ৮টার দিকে বিথী ফোন করে জানান, সুরভী এখনো বাসায় পৌঁছায়নি এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর বিথী দাবি করেন, সুরভী অপহৃত হয়েছে এবং অপহরণকারীরা ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাচ্ছে। যেহেতু অপহরণ দোকানের কাজের সময় হয়েছে, তাই টাকা দিতে হবে সৈকতকে।

পরদিন দুপুরে সুরভী নিজেই জানায়, সে কৌশলে পালিয়ে এসেছে। ওই সময় একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন করে সৈকতের স্ত্রীকে জানানো হয়, বিথী হাওয়া অপহরণকারীদের হাতে আটক এবং তাকেও মুক্ত করতে ২০ লাখ টাকা দিতে হবে। টাকা না দিলে নানা রকম হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনার তদন্তে নামলে পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় দুজনের অবস্থান শনাক্ত করে এবং তাদের গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপহরণের নাটক সাজিয়ে চাঁদা দাবির বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

ডিসি তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, মামলায় গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি চক্রে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনায় খানজাহান আলী থানা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন

মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই চালাতেন অনৈতিক কাজ, একে একে বেরিয়ে এল সব তথ্য

প্রকাশঃ 07:49:20 am, Wednesday, 9 April 2025

অপহরণের নাটক সাজিয়ে মুক্তিপণের নামে চাঁদা দাবির অভিযোগে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকা থেকে এক মা ও তার মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—বিথী হাওয়া ওরফে বিবি হাওয়া (৩৮) ও তার মেয়ে সুরভী সুলতানা (২০)।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

তিনি জানান, সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে নিউমার্কেট থানা পুলিশের একটি দল এলিফ্যান্ট রোডে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় চাঁদা দাবির একটি মামলা রয়েছে।

মামলার বাদী সৈকত নামের এক ব্যবসায়ী মিনিতা প্লাজায় একটি ঘড়ির দোকানের মালিক। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিথী ও সুরভী ঘড়ি কিনতে তার দোকানে আসেন এবং সৈকতের স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ গড়ে ওঠে।

২০ মার্চ বিথী তার মেয়ে সুরভীর জন্য দোকানে সেলসম্যান পদে কাজের অনুরোধ জানান। সুরভী কাজে যোগ দিলেও তার সন্দেহজনক আচরণের কারণে তাকে দোকানে না আসতে বলা হয়। এরপরও ২২ মার্চ সে দোকানে যায় এবং অসুস্থতার কথা বলে কিছুক্ষণ পর চলে যেতে চায়। সৈকত তাকে নিজেই বাসে তুলে দেন।

রাত ৮টার দিকে বিথী ফোন করে জানান, সুরভী এখনো বাসায় পৌঁছায়নি এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর বিথী দাবি করেন, সুরভী অপহৃত হয়েছে এবং অপহরণকারীরা ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাচ্ছে। যেহেতু অপহরণ দোকানের কাজের সময় হয়েছে, তাই টাকা দিতে হবে সৈকতকে।

পরদিন দুপুরে সুরভী নিজেই জানায়, সে কৌশলে পালিয়ে এসেছে। ওই সময় একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন করে সৈকতের স্ত্রীকে জানানো হয়, বিথী হাওয়া অপহরণকারীদের হাতে আটক এবং তাকেও মুক্ত করতে ২০ লাখ টাকা দিতে হবে। টাকা না দিলে নানা রকম হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনার তদন্তে নামলে পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় দুজনের অবস্থান শনাক্ত করে এবং তাদের গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপহরণের নাটক সাজিয়ে চাঁদা দাবির বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

ডিসি তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, মামলায় গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি চক্রে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।