বগুড়ার শেরপুরে প্রতিবেশী প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ও যোগাযোগের অভিযোগে কাবিল উদ্দিন (৩৪) নামে এক যুবককে ডেকে নিয়ে নি’র্ম’মভা’বে ‘পি’টি’য়ে ‘হ”ত্যা’ করা হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) গভীর রাতে উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়নের গোসাইবাড়ি স্থানীয়পাড়ায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত কাবিল উদ্দিন উপজেলার গোসাইবাড়ি গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে এবং পেশায় একজন ইলেকট্রিশিয়ান। তিনি মোবাইল ফোনে প্রতিবেশী ও আত্মীয় প্রবাসী বেলাল হোসেনের স্ত্রী মোছা. সুমাইয়ার (২৫) সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন। তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকায় যাতায়াতও ছিল। বিষয়টি সুমাইয়ার বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে নিতে পারেননি।
সোমবার রাত ১১টা থেকে ৩টার মধ্যে কাবিল উদ্দিনকে কৌশলে ডেকে নেওয়া হয়। পরে সুমাইয়ার বাবার বাড়ি হাটগাড়ি গ্রামে নিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে পাশের হাটগাড়ি ঈদগাহ মাঠের পেছনে নিয়ে আরও পিটুনি দেওয়া হয়, যার ফলে তার কোমর থেকে পা পর্যন্ত এবং দুই হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। অবস্থা খারাপ হলে আবারও তাকে সুমাইয়ার বাবার বাড়িতে এনে মাথায় পানি ঢালা হয়। পরে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরপরই সুমাইয়ার পরিবারের সদস্যরা লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। তাদের বাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম পলাশ জানান, নিহতের মরদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ভাঙা বাঁশের লাঠি, গাছের ডাল, প্লাস্টিক পাইপ, কাটা রশি এবং নিহতের মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে এবং মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
নিহতের স্ত্রী শাপলা খাতুন জানান, তার স্বামী সোমবার বিকেলে বাড়ি থেকে গাড়িদহ বারুণী মেলায় যাওয়ার কথা বলে বের হন। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল থেকে স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সাত মাস আগে তার স্বামী ভুলক্রমে সুমাইয়াকে ‘নাইস’ লেখা একটি মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, যা নিয়ে পরিবারে ভুল বোঝাবুঝি হয়। তিনি মনে করছেন, সেই ঘটনার জের ধরেই তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।