চট্টগ্রামের আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ ছোট সাজ্জাদকে রশি বেঁধে রাস্তায় ঘোরানো এবং পুলিশের মাইকিংয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার স্ত্রী তামান্না শারমিন। এ ঘটনায় তিনি একে ‘অপমানজনক’ আখ্যা দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজের ফেইসবুক পেইজে এক ভিডিও বার্তায় তামান্না বলেন, “আমার হাজবেন্ডকে এলাকায় এলাকায় নিয়ে গিয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করতেছে ওসি আরিফ। আমার হাজবেন্ড কি কোরবানির গরু?” ভিডিওতে তিনি প্রশ্ন তোলেন, রিমান্ডে থাকা একজন আসামিকে এভাবে প্রকাশ্যে ঘোরানো কি আইনি ও নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
ভিডিওর শুরুতে তামান্না বলেন, “আপনারা আমাকে চেনেন। আমি সাজ্জাদের বৌ তামান্না। কোথাও কি কোনো নজির আছে একজন রিমান্ডের আসামিকে এভাবে গরুর মত রশি বেঁধে এলাকায় এলাকায় নিয়ে ঘোরানোর?
সোমবার বিকালে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় এবং আগের দিন রোববার রাতে রাউজানের কদলপুরে পুলিশ ছোট সাজ্জাদকে সঙ্গে নিয়ে এলাকাবাসীকে ‘সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে’ সতর্ক করে মাইকিং করে। ভিডিওতে দেখা যায়, সাজ্জাদের গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, মাথায় হেলমেট, হাতে হাতকড়া এবং কোমরে দড়ি বাঁধা। তাকে ঘিরে ছিল পুলিশ ও সোয়াট টিমের সদস্যরা।
ওসি আরিফুল ইসলাম মাইকে বলেন, “চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। কোথাও সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজ দেখলে পুলিশকে জানান।”
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “অভিযান থেকে ফেরার পথে সাধারণ মানুষের ভিড় কমাতে ও সতর্ক করতে মাইকিং করা হয়েছিল।”
গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলে সাধারণ জনগণ ছোট সাজ্জাদকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে তাকে চান্দগাঁও থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ৫ দিনের রিমান্ডে থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামে আলোচিত জোড়া খুন মামলায়ও তাকে অভিযুক্ত করা হয়। ওই ঘটনায় বাদীপক্ষের দাবি, সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্নার পরিকল্পনায় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তামান্না বলেন, “ওর কোনো প্রভাবশালী ব্যাকগ্রাউন্ড নাই, তাই এভাবে অপমান করা হচ্ছে। আমি তো মেয়ে মানুষ, আমাকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। এখন আমি কী করব বলেন?…তারা আমার হাজবেন্ডকে এত অপমান না করে গুলি করে মারতে পারতেছে না?”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফেসবুক লাইভে এসে থানার ওসিকে পেটানোর হুমকি দেওয়ার দুই দিন পরই ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ।